আমরা জানি, শিম্পাঞ্জি, গরিলা, বেবুন, ওরাংওটাং, মানুষ এদের সবার একজন সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল, যার থেকে বিভিন্ন সময়ে বিবর্তনের মাধ্যমে বিভিন্ন বানর প্রজাতির সৃষ্টি হয়েছে কোটি কোটি বছর ধরে। শিম্পাঞ্জি আর মানুষ আলাদা হয়ে যায় ষাট লক্ষ বছর আগে। এই বিবর্তনের পাথুরে প্রমাণ হল, শিম্পাঞ্জি আর মানুষের ডিএনএ ক্রম ৯৯% হবহু এক।
কিন্তু ৯৯% জিনোমক্রম হবহু মিলে গেলেও, মানুষের সাথে কিন্তু শিম্পাঞ্জি, গরিলা, বেবুন, ওরাংওটাং এদের ক্রোমোজোম সংখ্যার কিন্তু পার্থক্য আছে। মানুষের আছে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম, আর এসব বানর প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা ২৪ জোড়া।
এবার যাঁরা বিবর্তনে বিশ্বাস করেন না, তাঁরা হইহই করে উঠবেন, বানরের বিবর্তনেই যদি মানুষের সৃষ্টি, তবে একজোড়া ক্রোমোজোম গেল কোথায়? এজন্য বলি বিবর্তন ভুয়ো।
সত্যিই তো! “পক্ষীরাজ যদি হবে, তাহলে ন্যাজ নেই কেন?” কিন্তু এখানেই মজা বিবর্তনের আর আণবিক জীববিদ্যার। বিবর্তনের কোন এক বাঁকে মানুষের ক্ষেত্রে দুটো ক্রোমোজোম জুড়ে গিয়েছিল। আমাদের ২ নম্বর ক্রোমোজোমটি হল সেই জোড়া ক্রোমোজোম। এবার ইহা যে সত্য, তার প্রমাণ কি? প্রমাণ ছাড়া কি বিজ্ঞান হয়? হয়না! তাহলে দেখা যাক কি ভাবে এই জুড়ে যাবার প্রমাণ পাওয়া গেল।
ক্রোমোজোমের থাকে সেন্ট্রমিয়ার (Centromere) বলে একটি অংশ, যা কোষ বিভাজনের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। আর ক্রোমোজোমের দুপ্রান্তে থাকে টুপির মত টেলোমিয়ার (Telomere) অংশ। এবার দুটি ক্রোমোজোম জুড়লে দুপ্রান্তের টোলোমিয়ার নিশ্চয় মাঝে দেখা যাবে, আর একটার জায়গায় দুটো সেন্ট্রোমিয়ার অঞ্চল। তাইতো?
আমাদের ক্রমোজোম ২ এ কিন্তু ঠিক তাই থাকে। ক্রোমোজোমের দুপ্রান্তের সাথে মাঝেও থাকে টেলোমিয়ার অঞ্চল, আর থাকে দুটি সেন্ট্রমিয়ার অঞ্চল। এই দুটির মধ্যে একটি অবশ্য নিষ্ক্রিয়। প্রদত্ত ছবিতে দেখুন, আরও স্পষ্ট হবে ব্যাপারটা।
তাহলে প্রমাণিত হল, মানুষের ক্ষেত্রে আদি বানরের দুটো ক্রোমোজোম জুড়ে গিয়েছিল বলে মানুষের ক্রোমোজোম এক জোড়া কম। আর এভাবেই আরেকবার প্রমাণ হল, শিম্পাঞ্জি বা অন্যান্য বানরেরা ও মানুষ একই আদিম বানর পূর্বপুরুষ থেকে বিবর্তিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছে।
বিঃদ্রঃ- এসব বহুল প্রচারিত সাধারণ তথ্য। তাই আর নির্দিষ্ট কোন সূত্র দিলাম না। বিস্তারিত জানতে গুগলে “chimpamzee 24 chromosomes” বা “chromosome 2 mystry” search দিলেই অনেক নির্ভরযোগ্য সূত্র পাবেন।